google-site-verification=r3lYzE3jI5XC8igrXRKdm9HAWALrzmx6coPmyeHNww4
Spread the love

সাফাত বিন ছানাউল্লাহ

সৃষ্টিকর্তা সবাইকে অনেক কিছু দেন আবার কাউকে কষ্টে রাখেন। মানুষ যাতে তাকে ভুলে না গিয়ে তাঁর কথা স্মরণ করে প্রতিনিয়ত। এই পৃথিবীতে অসংখ্য মানুষ বসবাস করে যাদের নিজস্ব কর্মে আপন স্বকীয়তায় অন্যের কাছে মনে রাখার মতো পাত্র হয়। মানুষ ভালোবাসে, মনে রাখে। শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশের একটি যদিও না থাকে, উপরওয়ালার ইচ্ছায় ওরা আপন প্রতিভায় স্বমহিমায় ভাস্বর। এটিই মহান প্রভুর বিশেষত্ব। আমাদের চতুর্দিকে প্রতিভা নিয়ে জন্মগ্রহণ করা শতশত আলোকবর্তিকা রয়েছে যারা প্রতিবন্ধকতা পিছনে ফেলে জয় করেছে পৃথিবী।অন্নদাশের বয়স পঞ্চাশোর্ধ। বাড়ী আংশিক চন্দনাইশের সাতকানিয়া থানাধীন ধর্মপুর গ্রামে। খুব ছোটবেলায় চোখের অসুখে ভুগে শয্যাশায়ী হয়ে পরেন তিনি। এরপর টাকায় অভাবে চিকিৎসা করাতে না পেরে চিরতরে অন্ধত্ব বরণ করতে হয় তাকে। দুচোখে পৃথিবীর আলো না দেখলেও দমে যাননি দরিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত তিলতিল করে বেড়ে উঠা মানুষটি। কাঁধে ঝুলিয়েছেন ঢোল, মায়াবী কণ্ঠে গান, এটাই তাঁর এখন পেশা। সুরের মূর্ছনায় মাতিয়ে তুলেন সর্বত্র। গানই অন্নদাশের অন্ন জোড়াবার একমাত্র অবলম্বন। চোখের আলো নেই তাতে কী!শিল্পীর সাথে কথা বললে তিনি বলেন- বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের চার বছর পর থেকে তিনি গেয়ে চলেছেন এই গান। প্রতিনিয়ত জয় করছেন হাজারো ভক্তের হৃদয়। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিয়েও করেছেন, আছে তিন পুত্র সন্তান। ওদেরকেও সেই অপয়া অর্থকষ্টে জ্ঞানের আলো দিতে পারেননি! ছোট ছেলেকে নিয়ে প্রতিদিন তিনি বেড়িয়ে পরেন ভাগ্যান্বেষণে। চন্দনাইশ সহ বিভিন্ন উপজেলার হাট-বাজারে, কারো ঘরে গান শোনান। নির্বাচন আসলে নানান জায়গায় সবচেয়ে বেশী ডাক পরে অন্নের। প্রার্থীদের অফিস গরম রাখার জন্য তাঁকে আমন্ত্রন জানানো হয় অনুরোধের গান গাওয়ার জন্য। সেও নির্বাচনী সংগীত গেয়ে মাতিয়ে তোলে এলাকা। আধুনিক, আঞ্চলিক, ভাণ্ডারী, কাওয়ালী, মুর্শিদি সহ আরো অনেক রকমের গান করেন তিনি।ভ্রমণপিয়াসীদের পছন্দের চট্টগ্রামের রূপ বৈচিত্র্যের রাণী খ্যাত বান্দরবনের বিভিন্ন নান্দনিক জায়গা সহ চট্টগ্রামের পর্যটনকেন্দ্র গুলোতে গিয়ে গান করেন অন্নদাশ। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা গানপাগল পর্যটকরা হারিয়ে যান গান নামের অন্য জগতে। শিল্পীর মোহনীয় সুরে কেউ ৫০০ কেউ ১০০০ টাকা পর্যন্ত বখশিশ দেন, কারো হৃদয় ছুঁয়ে গেলে পরিমাণটা হয় আরো বেশি। তাতেই চলে যায় অন্নদাশের সাজানো সুখের সংসার। একশ্রেণীর কিছু দুষ্ট লোকের খপ্পরেও পড়তে হয় মাঝেমধ্যে। কিসের শিল্পী, কিসের গান, এখানে গাইতে পারবিনা বলে গালমন্দ করে। তাতেও দমবার পাত্র নয় পথের জাতশিল্পী অন্নদাশ ।।সাফাত বিন ছানাউল্লাহ্কবি,প্রাবন্ধিক,সংগঠকসাতবাড়ীয়া,চন্দনাইশ,চট্টগ্রাম,বাংলাদেশ

Verified by MonsterInsights