শহরের কোলাহল, অধুনিকতার চাপেএকান্তে শান্তিতে সময় কাটানার জন্য অনেকেই একটা জায়গা খোজেন। তাই কোলকাতার এই বিহারের গল্প আজ আমি বলবো, যেখানে দু- দণ্ড বসলেই তা শান্তি পাবেন খানিকটা। কলকাতার এইদোতলা বিহারের একটি তল প্রার্থনা হল আছে। সব দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকেষ এখানে প্রার্থনা কক্ষ। বেদীর উপর বুদ্ধমূর্তি প্রতিষ্ঠিত আছে।কলকাতার নিপ্পনজান মায়োহোজির দ্বিতীয় তলে রয়েছে ধ্যান কক্ষ আর ধর্মগ্রন্থাগার।সকালে প্রার্থনার সময় ও সন্ধ্যেতে প্রার্থনার সময় মন্দির পরিদর্শন করার সুযোগ পাবেন। ভোর ৫টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত সকালের প্রার্থনা হয়। অন্যদিকে বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যে ৭টা পর্যন্ত সন্ধ্যের প্রার্থনা করা হয়ে থাকে। বুদ্ধ পূর্ণিমার সময় এই বিহারে অত্যন্ত ধুমধাম করে পালন করা হয়। বৌদ্ধদের অন্যতম শুভ উতসবের দিন। তবৈ সবার এই অবাধ প্রবেশের অনুমতি আছে।
দক্ষিণ কলকাতার ঢাকুরিয়ার রবীন্দ্র সরোবরে গাঁ খেসে খুব স্বল্প পরিচিত বৌদ্ধ মন্দির হল নিপ্পনজান মায়োহোজি কথা বলছি আমি। জাপানিদের তৈরি মন্দিরটি। জাপানিদের বিশ্বাস, মঠটি হল প্রশান্তির আদর্শ স্থান। দক্ষিণ কলকাতার লেক রোডে অবস্থিত এই মন্দিরটি ১৯৩০ ৩১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বৌদ্ধধর্মের নিপ্পনজান মায়োহোজি বা নিপ্পনজান-মায়োহাজি-ডাইসাঙ্গা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বিশ্বাস অনুসরণে এটি স্থাপিত হয়েছে। বৌদ্ধধর্মের এই ভাগটি চালু হয় ১৯১৭ সালে। বৌদ্ধ সন্ন্যাসী নিচিদাতসু ফুজি বৌদ্ধ ধর্মের এই বিশেষ ভাগটি প্রবর্তন করেন। বৌদ্ধমন্দিরে আরাধনা করেন মূলত এই সম্প্রদায়ের মানুষর।
অপূর্ব সুন্দর এই মন্দির। দারুন নকশায় কাজ,জাপানি সংস্কৃতির প্রভাব স্পষ্ট এখানে। মন্দিরে সবসময় বিরাজ করে অদম্য শান্তি। প্রধান ফটক পেরিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলেই দর্শনার্থীর মন শান্ত হয়ে যায়। মন্দিরে ঢুকতেই চোখে পড়ে জাপানি ভাষায় লেখা বার্তা, আছে “পদ্মসূত্রের এই অপরূপ জগতে আমি নিজেকে আত্মসমর্পণ করলাম”।
নিচিদাতসু ফুজি এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন । বৌদ্ধ সন্ন্যাসী নিচিরেনের শিষ্য, ছিলেননিচিদাতসু ফুজি। নিচিরেনের ছিলেন লোটাস ধর্মসূত্রের মতাবলম্বী। লোটাস সূত্র ভারতে প্রচার করার লক্ষ্যেই ,নিপ্পনজান মায়োহোজি বৌদ্ধ মন্দির প্রতিষ্ঠা করার হয়েছিল। এই মন্দিরে এখন কলকাতার বৌদ্ধ ঐতিহ্যের নিদর্শন।