রামদুলাল সরকার স্ট্রি, মানে ছাতুবাবু লাটুবাবুর বাজার। একটু এগিয়ে গেলেই বাজারের ব্যস্ত কোলাহল, পৌঁছনোর আগেই বাঁ হাতে লাল রঙের যে বাড়ি আছে সেটিই বসা কালীর মন্দির’। রাস্তা থেকেই দেখাতে পাঠেন এই মাতৃমূর্তি। কালীর যে রুপ দেখে আমরা অভ্যস্ত, তার চাইতে অন্য রকম এই ‘বসা কালী’ মায়ের রূপ। এই মায়ের নাম আসলে “আনন্দময়ী কালী”। কিন্তু লোকমূখে জনপ্রিয় ‘বসা কালী’ নামে। এখানে মা শিবের ওপর দাঁড়িয়ে নাই। মা কালী এখানে বসে আছেন আছেন। সেইটা কারণে এই কালী মাতৃরূপটি ব্যাতিক্রমি বলে দাবি করা যেতেই পারে।
আজ থেকে তিনশো বছর আগে কলকাতা যখন ব্রিটিশ তত্ত্বাবধানে নতুন রূপ নিচ্ছে তখন এই এলাকা ছিল জঙ্গলাকীর্ণ। তখন মোতিলাল বন্দ্যোপাধ্যায় জঙ্গলের মধ্যেই মা অধিষ্ঠান করছেন এমন স্বপ্নাদেশ পান। এবং খুঁজে পান এই আশ্চর্য মায়েরমূর্তির। শিবের উপরে বসে রয়েছেন মা বাহু-প্রসারিতা করে।
তখন এই এলাকা ছিল মিত্র পরিবারের অধিকারে। তাঁরাই মোতিলালবাবুকে এখানে মন্দির নির্মাণে তাঁরা সাহায্যও করেন। তৈরি হয় আনন্দময়ীর মন্দির। দীপান্বিতা কালীপূজায় হয় এখানে নিয়ম নিষ্ঠার সাথে। একাদশী ও অমাবস্যায় মাকে মাছের ভোগ দেওয়া হয় এখানে। কিন্তু অন্যান্য দিন নিরামিষ। তবে কালী পুজোর দিন দেবীকে শোলমাছের ভোগ দেওয়া হয় । স্বপ্নাদেশ।মায়ের অনেক কিছুই ব্যতিক্রম। অম্বাবাচীর দিন যেখানে প্রায় সব দেবীমূর্তির মুখই অবগুণ্ঠনে থাকে, সেখানে ‘বসা কালী’ আনন্দময়ীর মুখমণ্ডল উন্মুক্ত থাকে। আর চার দিনের দিন মাকে মাছ, ভাত আর পান দিয়ে ভোগও দেওয়া হয়।