কলম তৈরির ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করতে গেলে এক দীর্ঘ এবং বৈচিত্র্যময় ইতিহাস পেয়ে যাবো। এটি হাজার বছর আগে থেকে শুরু হয় এবং সময়ের সাথে সাথে নানান রকম পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে এসেছে।প্রাচীন যুগের কলম:
রিড পেন এবং ব্রাশ (Reed Pens and Brushes): কলমের শুরুর দিকে প্রাচীন মিশরে খেজুরের গাছের গুল্ম ও রিড পেন ব্যবহৃত হতো, যা সরু লম্বা কাঠির মতো ছিল। এগুলো দিয়ে গাছের বাকল বা প্যাপিরাসের উপর লিখা হতো।
কোয়িল পেন (Quill Pen): চতুর্থ থেকে পঞ্চদশ শতাব্দীর মধ্যে ইউরোপে ময়ূর বা হাঁসের পালক দিয়ে কোয়িল পেন তৈরি করা হতো। পালকের ডগা কেটে কালি দিয়ে লিখা হত।
মধ্যযুগের কলম:
মেটাল নিব পেন: ১৮০০ সালের দিকে মেটাল নিব পেন তৈরি হতে শুরু করে। এতে ধাতব নিব যুক্ত থাকত যা কাগজে বেশ স্থায়ীভাবে লিখা যেত।আধুনিক যুগের কলম:
ফাউন্টেন পেন (Fountain Pen): ১৮৮৪ সালে লুইস ওয়াটারম্যান একটি ফাউন্টেন পেন উদ্ভাবন করেন, যাতে কালি রিজার্ভার ছিল এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে কালি ফ্লো করত।
বল পয়েন্ট পেন (Ballpoint Pen): ১৯৪০-এর দশকে লাসজলো বিরো প্রথম বারের মতো বলপয়েন্ট কলমের উদ্ভাবন করেন। এই কলম দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে কারণ এটি সহজে, দ্রুত এবং বেশিরভাগ পৃষ্ঠে লেখা যায়।
জেল পেন এবং রোলারবল পেন: ১৯৮০-এর দশকে জেল পেন ও রোলারবল পেনের উদ্ভাবন হয়, যা বলপয়েন্ট কলমের তুলনায় আরও মসৃণ লেখা দেয়।বর্তমান যুগের কলম:বর্তমানে আমরা ডিজিটাল কলম বা স্টাইলাস ব্যবহার করছি, যা স্মার্টফোন ও ট্যাবলেটের মাধ্যমে লেখা বা ডিজাইন করা সম্ভব করে।এইভাবে, কলমের ইতিহাসে প্রতিটি যুগে নতুন প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের ফলে লেখা আরও সহজ ও দ্রুত হয়েছে, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে।