google-site-verification=r3lYzE3jI5XC8igrXRKdm9HAWALrzmx6coPmyeHNww4
Spread the love

শীতকালে কাছেপিঠে ঘুরতে যাওয়া নিয়ে গেলে আমি মোয়ার শহর জয়নগরের কথা বলবো আগে। এখানকার দ্রষ্টব্য গুলো দেখার আগে জয়নগরের ইতিহাস সম্পর্কে কিছুটা ধারণা থাকা দরকার।
পূর্ব বঙ্গের বারো ভুঁইয়ার কথা আমরা ইতিহাসে পড়েছি। আনুমানিক ১৬০০ খৃষটাব্দে বারো ভুঁইয়ার একজন প্রতাপাদিত্যের সঙ্গে মুঘল সম্রাটের যুদ্ধ হয়েছিল । সেই সময় যশোর খুলনা অঞ্চলের চৌধুরী, মিত্র ও দত্তরা পশ্চিম বঙ্গের জয়নগর গ্রামে এসে বসতি স্থাপন করে। তারা ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী ও প্রভাবশালী জমিদার। লাঠি ও মাটি ছিল তাদের ক্ষমতার উৎস। কিন্তু তারা শুধু জমিজমার মালিক হননি, মন্দির প্রতিষ্ঠা, দিঘি খনন, রথ যাত্রা,দোল দুর্গোৎসব প্রভৃতি জনকল্যাণ মূলক কাজ ও করেছেন। এই অঞ্চল দিয়ে একসময় আদি কালী গঙ্গা বয়ে যেত। আজ অবলুপ্ত হয়ে গেছে। তাই দিঘির নামকরণ হয়েছে রাজ বল্লভ গঙ্গা, মিত্র গঙ্গা প্রভৃতি। জয়নগরে আছে শিবনাথ শাস্ত্রী, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, নির্মলা মিশ্র প্রমুখের বাড়ি।
আসি
জয়নগর রাধা বল্লভ জিউ মন্দির এর কথায়।

এই মন্দিরটি নিয়ে অনেক কিংবদন্তি আছে ।একটিই কদম ফুল ফোটে এখানে প্রতিবছর দোল পূর্ণিমায়।
এই মন্দিরের পাশেই রয়েছে গঙ্গা, যা রাধাবল্লভ জিউ গঙ্গা নামে পরিচিত। আদি গঙ্গার ধারা আজ মৃতপ্রায় এবং মানুষ তাকে অধিগ্রহণ করে নিয়েছে পুকুরের মতো ব্যবহার করে নাম দিয়েছে মিত্র গঙ্গা, ঘোষ গঙ্গা,বোস গঙ্গা ইত্যাদিতে।

“ডাহিনে অনেক গ্রাম রাখে সাধু চালা ।
ছত্রভোগ উত্তরিলা অবসান বেলা ॥
মহেশ পূজিয়| সাধু চলিল| সত্বর।
অম্বুলিঙ্গে গিয়া উত্তরিল সদাগর ॥”

কবি কঙ্কণ মুকুন্দরামের চন্ডীমঙ্গলের লাইন । আর এই চার টি লাইন যথেষ্ট প্রমাণ দেয়, এককালে সুন্দর বন শুরু বাদ বন ছিলো না এখানে বানিজ্য সমৃদ্ধ জনপদ ছিলো। কিন্তু সুলতানদের শাসন কালে , কলিকাতা যখন ইংরেজরা বন্দর তৈরি করলো, তখন সুলতান গন ডাচদের বানিজ্য স্বার্থ খালকেঁটে আর সরস্বতীর সাথে যুক্ত করে দেওয়া গঙ্গার ধারাকে। গঙ্গার ধারাকে কেটে কিছুটা পশ্চিমে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাই একে কাঁটিগঙ্গা বলা হয়। প্রসঙ্গত বলি এই অংশের থেকে গঙ্গার জল কোনো পবিত্র তীর্থক্ষেত্রে লাগে না এই জন্য। কিন্তু এই কাটি গঙ্গা আদি গঙ্গার মজে যাওয়ার প্রধান করান। এবং এর সাথে গঙ্গা র অন্যান্য নদী গুলি বিপদে পরায়। নদী নির্ভর শীল, বাংলার কৃষি বানিজ্য শিল্প প্রভুত ক্ষতি হয়।
এই গঙ্গা মজে যাবার কারন খুঁজতে গিয়ে ইতিহাস বলে ১৭৭৫ সালে মুর্শিদকুলিখাঁ বেতরের কাছে খাল কেটে গঙ্গার মূল ধারা ঘুরিয়ে সরস্বতী নদীর মরা খাত দিয়ে বজবজ, রায়চক, ফলতা, ডায়মন্ড হারবারের পাশদিয়ে সাগরের মুড়ি গঙ্গায় নিয়ে গিয়ে মেশায় আর তখন থেকেই আদি গঙ্গার মৃত্যু ঘন্টা বাজতে শুরু করে।
দেখাযায় বেতর থেকে কাকদ্বীপের মুড়ি গঙ্গার
কোন মাহাত্য নেই ওটা কাটাগঙ্গা নামে পরিচিত। ওই জলে আজও কোনো মাঙ্গলিক কাজ হয়না।

রাধাবল্লভ জিউ মন্দিরের জগন্নাথদেবের দারু বিগ্রহ, এই মন্দিরের চাঁদনী এবং মন্দির সংলগ্ন দোলমঞ্চ প্রতিষ্ঠা করে যান মিত্র বংশের কৃষ্ণমোহন মিত্র।

এই মন্দিরে প্রতি বছর মহা সমারোহে দোল উৎসব ও রাস উৎসব পালন করা হয়, যাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এসে এখানে সম্মিলিত হন।

বৰ্ত্তমান হেষ্টিংসের দক্ষিণে ও খিদিরপুরের উত্তরে আদিগঙ্গা খুব প্ৰশস্ত ছিল এবং এই অঞ্চলে থেকে কিন্তু শাকরাইল পৰ্য্যন্ত কোন নদী ছিল না । শাকরাইলের দক্ষিণে সরস্বতী বইতো । সে আরো দক্ষিণ গিয়ে দামোদর, রূপনারায়ণ ও হলদির নদীর সাথে মিশে সমুদ্রে মিশতো । খিদিরপুর থেকে শাকরাইল পৰ্য্যন্ত হুগলীন দা কাটিগঙ্গা নামে খ্যাত কাটিগঙ্গা আসলে ভাগীরথ খাদ না ; হুগলী নদী ষোড়শ শতাব্দীতে খাত হয় এবং ভাগীরথী ও সরস্বতী খাল দ্বারা যুক্ত করা হয় ক্রমশঃ মূল ভাগীরথী , আদিগঙ্গা মজিয়া গিয়ে জলপ্রবাহ ঐ খালে প্রবলবেগে প্রবাহিত হওয়ায় বৰ্ত্তমান কাটিগঙ্গার সৃষ্টি করিয়াছে। এখন “পদ্মা” গঙ্গানদীর একাংশ বলে দাবি করা হলেও কিন্তু পদ্মার বিস্তৃতি ও জলরাশির গৌরব আধুনিক। গবৰ্ণর জেনারেল ওয়ারেন হেষ্টিংসের সময়ে ( খৃঃ১৭৮০ ) মেজর রেনেল সাহেব যে বঙ্গদেশের নদীসমূহের নক্সা প্ৰস্তুত করেন, তাহাতেও পদ্মার এখনকার রূপ দেখা যায় নি। আসলে নবাবদের আমলেই ভাগীরথী ও পদ্মার সন্ধিস্থান, ছাপাঘাটীর মোহানী,বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল এবং গঙ্গার জল অধিকাংশই পদ্মার পথে বঙ্গীয় উপসাগরে পরছিল। ফারকা বাঁধ বানানোর আগে খরস্রোতা পদ্মা আমাদের গঙ্গা নয়।
আদি গঙ্গা গতি পথ নিয়ে মাথা ঘামানোর কারণ আদি গঙ্গা ঘিরে আমাদের বাঙালি জাতির অনেক ঐতিহ্য লুকিয়ে আছে। কারণ যদি আদি গঙ্গা তার পূর্ব রূপটি ধরে রাখতে পারতো তাহলে, ছত্রভোগ, জয়নগর, বারুইপুর, বোড়াল , রাজপুর মতো জনপদ গুলো হয়তো আরো সমৃদ্ধ জনপদ হতো।

ধর্ম সাধারণত শাষকের অস্ত্র, শেষ কয়েকটি শতক তাই ইসলাম রাজ ধর্ম হবার সুবাদে , বাংলার লোক সংস্কৃতি সহ বৌদ্ধ ধর্ম, এবং জৈন ধর্ম কে নিশ্চিহ্ন , করতে এক ভালোই ভুমিকা গ্রহণ করেছিলেন। যেমন ব্রাহ্মনদের প্রভাবেই জটার দেউল পরিনত হয়েছে শিব মন্দিরে।এই সময় বৈষ্ণব ধর্ম টিকে রক্ষা এবং সংগঠিত করার দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে, এই আদি গঙ্গার ধারে ধরেই চৈতন্য মহাপ্রভু চলেছিলেন নীলাচলে। তিনি শাক্তদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন। যেমন ছত্রভোগে ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দির এক সময় বলি বন্ধ হয়ে যায় তার প্রভাবে।
এবার বৈষ্ণব এবং তন্ত্র বিদ্যার মুল লাড়াইটা হয়ে ছিলো জয় নগর অঞ্চলে। তাই এই অঞ্চলের মন্দির গুলো নিয়ে অনেক মিথ বা লোক কথা শোনা যায়। জয় চন্ডী, ধনন্তরীর, ব্রম্ভময়ী কালি কে নিয়ে শুধু নয় , সমান তালে রাধা কৃষ্ণের মন্দির নিয়ে ও চালু আছে অনেক মিথ গল্প । আবার ঠিক বেশ উৎসবের মতোই জয়নগর বিভিন্ন স্থানে শ্রী কৃষ্ণের বিভিন্ন রূপের পূজা হয় । দোলের পরের দ্বিতীয় দিনের পুজো দ্বিতীয় দোল ,তৃতীয় দিনের পুজো তৃতীয় দোল এভাবে সাত দিন ধরে সাত জায়গার আলাদা আলাদা মন্দিরে চতুর্থ ,পঞ্চম ,ষষ্ঠ ,ও সপ্তম দোল নামে দোল উৎসব উৎযাপন করা হয় । এই প্রত্যেকটা পুজোরই কোনো না কোনো মিথ তবে সবচেয়ে প্রচার পেয়েছে নটঘট ঘটনা ঘটে পঞ্চম দোল কথা । রাধাবল্লভতলার রাধাবল্লভ জিউ দোল উৎসবে ।
মিথ টি একটি সেটা হলো কদম গাছ নিয়ে । বহু যুগ পুরোনো কদম গাছে পুজোর দিন ভোরে এই কদম ফুল ফুটবেই । এই ফুল দিয়েই পূজিত হবেন শ্রী রাধাবল্লভ জিউ । যা এই সময় বিরল । এই অর্পণ করে হয় শ্রী রাধাবল্লভ জিউ এর চরণে । এছাড়া আরো একটি ঘটনা হলো নটঘট শ্রী কৃষ্ণ কথা।

বৈষ্ণব মতে দোল পূর্ণিমার দিন রাধা কৃষ্ণ যখন দেখা হয়েছিল তখন রাধা পোশাকের কারণে অপ্রস্তুতে পরে, তখন আবীর রঙ দিয়ে রাধার লজ্জা ঢাকে সখী রা । সেই থেকেই দোল উৎসব এর রিতীনুসারে রাধাকৃষ্ণ কে আবীর মাখানো হয়। তা এখানকার কৃষ্ণ এতই নটঘট যে পুজোর পর সকল ভক্তবৃন্দের ও দর্শনের পর আবার যখন তাঁকে স্নান করিয়ে মন্দিরে স্থাপন করা হয়। তখন যদি তাঁর বিগ্রহে একবিন্দু আবীর বা জলের কনা থাকে তাহলে তিনি কোনো সেবায়েতদের ঘুমোতে দেন না । এখানে পঞ্চম দোল উৎসব খুব বিখ্যাত।

রাধাবল্লব জিউর মূল মন্দিরের ইতিহাসের উৎস লুকিয়ে আছে মোঘল জমানায়। বলা হয়, ১৬০০ সালে মহারাজ প্রতাপাদিত্যের সঙ্গে মোঘলদের যুদ্ধ হয় এবং সেই সময় কয়েকটি রাধাকৃষ্ণের বিগ্রহ মুঘল সেনাদের দখল থেকে আটকাতে অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়। তার মধ্যে ছিল জয়নগরের রাধা বল্লভ জিউর বিগ্রহটিও। সেটিকে প্রথমে এনে রাধাবল্লব জিউর মূল মন্দির সংলগ্ন একটি ছোট মন্দিরে রাখা হয়।

রাধা বল্লভ মন্দির, বারো ভুঁইয়ার সময়ের প্রতাপাদিত্যের সঙ্গে মুঘলদের যুদ্ধের সময় পূর্ব বঙ্গের যশোর থেকে কয়েকটি শ্রী রাধা কৃষ্ণের মুর্তি এনে জয়নগরে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। রাধা বল্লভ বিগ্রহ তার মধ্যে অন্যতম।
তবে রাধা বল্লভ মন্দিরের ইতিহাস নিয়ে বিতর্ক শেষ নেই। বর্ষীয়ান ঐতিহাসিক দেবীশঙ্কর মিদ্যার
প্রবন্ধের কিছু কথা তুলে ধরি।
“কথিত আছে প্রতাপাদিত্য খাড়ি থেকে রাধাবল্লভের মূর্তি জয়নগরে স্থানান্তরিত করেছিলেন । রাধাবল্লভ এবং অন্যান্য কিছু মূর্তি জয়নগর এবং পার্শ্বস্থ গ্রামে স্থানান্তরিত হয়েছিল একথা ঐতিহাসিক সত্য বটে , কিন্তু প্রতাপাদিত্য খাড়ি ধ্বংসের পরে খাড়ির মূর্তি জয়নগরে এনেছিলেন কিনা এর সঠিক তথ্য পাওয়া যায় নি । এই স্থানান্তর আরো পরবর্তী সময়ে হয়েছে , যা আমরা পরে বলেছি ।
ইতিহাসের চাকা থেমে থাকে না । বন্দর নগর খাড়ির ললাটলিখন যে আলাদা । বিশাল সৈন্যবাহিনী নিয়ে মুঘল সেনাপতি মানসিংহ যশোহর আক্রমণ করলেন । মৃত্যুর আগেই প্রতাপাদিত্যের হাতছাড়া হল খাড়ি সহ কিছু পরগনা । খাড়ি এল মণ্ডল জমিদার শোভারামের হাতে । পরবর্তী সময়ে তাঁর বংশধররা বাওয়ালীর জমিদার রূপে নিজেদের সংহত করেন । খাড়ি গ্রাম হয়ে গেল মাগুরা পরগনার ডিহি দেবীপুরের অন্তর্গত । তাঁরা খাড়িকে আবার নতুনভাবে সাজালেন । রাধাবল্লভের মন্দির আবার সেজে উঠলো । ১৭৫০ খ্রিস্টাব্দ যেতে না যেতে কালান্তক যমের মতো এলো বর্গীরা । খাড়ি বন্দর লুণ্ঠিত হল । সম্ভবত সেই সময় সরখেলরা রাধাবল্লভের মূর্তি সহ খাড়ি থেকে প্রথমে বিষ্ণুপুর , তারপর জয়নগরে পালিয়ে আসেন । এই ভাবে খাড়ির ঐতিহাসিক রাধাবল্লভ মূর্তি জয়নগরে স্থানান্তরিত হয় । কিন্তু খাড়ির ইতিহাস থেমে থাকে না । বাওয়ালীর জমিদাররা বর্গী আক্রমণ প্রতিহত করে নিজেদের জমিদারি আবার সাজিয়ে তুললেন । সম্ভবত সে সময় খাড়ির রাধাবল্লভ মন্দিরে নতুন মূর্তি বসিয়ে পূজাপাঠ আবার শুরু হয় ।
বাওয়ালীর জমিদাররা কিন্তু খাড়িকে চিরদিন ধরে রাখতে পারেননি । আবার পালা বদল । সূর্যাস্তের আইনের ফেরে নিলামে ওঠে খাড়ি । ১৮৫০-৫১ খ্রিস্টাব্দে খাড়ি কিনে নেন কোন্নগরের কুলীন মিত্র সমাজের অন্তর্গত ঝামাপুকুরের মহারাজা দিগম্বর মিত্র । তিনি তাঁর মতো সাজিয়ে তুললেন খাড়ি । তাঁর পৌত্র মন্মথনাথ রায়বাহাদুর এর সময়ে খাড়ির নারায়ণী দেবোত্তর দেন এবং এই দেবী তখন থেকে জগদ্ধাত্রীর ধ্যানে পূজিত হতে থাকেন । কিন্তু তিনি রাধাবল্লভের ক্ষেত্রে তেমন ব্যবস্থা করেন নি । ১৮৯৬-৯৭ খ্রিস্টাব্দে অগ্রহায়ণের ঝড়ে সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়ে বসন্তরায়ের তৈরি রাধাবল্লভের রত্নমন্দির । তার অনেক বছর পর ১৯৫৬-৫৭ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ ওই পুরানো মন্দিরের ভিতরে উপর মাখমচন্দ্র নস্কর আবার তৈরি করলেন বাংলা আটচালার শৈলীতে রাধাবল্লভের মন্দির । নতুন মূর্তি বসলো । আজও সেই মন্দির আছে বটে ।”

শ্রী কৃষ্ণের দারু বিগ্রহ চার ফুট এবং শ্রী রাধার উচচতা তিন ফুট।প্রাচীন মন্দির ধ্বংস হয়ে গেছে। বর্তমান মন্দির তৈরি করেছেন দক্ষিণ বারাসাতের চৌধুরী জমিদার উনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে কোন এক সময়ে। পাশের রাধা বল্লভ গঙ্গা দিঘি থেকে একটি অদ্ভুত শিব লিঙ্গ পাওয়া যায়। এই শিব লিঙ্গ টি মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেন শ্রী শ্যামা দাস ঘটক। এই মন্দিরে শিবের প্রস্তর মুর্তি ও রয়েছে।
একটা লক্ষনীয় বিষয় এই অঞ্চলের বিগ্রহ গুলি অধিকাংশ দারুন বিগ্রহ , বিশিষ্ট গবেষক দেবপ্রসাদ পেয়াদা বলছেন “দক্ষিণবঙ্গের তো বটেই সারা পশ্চিমবঙ্গে এমন অতুলনীয় ঐতিহাসিক দারুবিগ্রহ বিরল। বিগ্রহটি সপ্তদশ শতাব্দীর। যশোহর অধিপতি প্রতাপাদিত্যের কাকা বসন্তরায় প্রতিষ্ঠিত বিগ্রহ বলে কথিত। জনশ্রুতি, মগ দস্যুরা এই বিগ্রহ চুরি করে নিয়ে গিয়ে পরে গভীর জঙ্গলে ফেলে দেয়। জয়নগরের মিত্র জমিদাররা এই বিগ্রহ তাঁর খাড়ির মহল থেকে এনে জয়নগর গঞ্জে প্রতিষ্ঠা করেন। দোল পূর্ণিমার পর পঞ্চমী তিথিতে অনুষ্ঠিত এই রাধাবল্লভের পঞ্চমদোল বিখ্যাত।মেজর স্মিথ তাঁর লিস্ট অফ এনসিয়েন্ট মনুমেন্টস ইন প্রেসিডেন্সি ডিভিশন গ্রন্থে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে এই ঘটনাটি উল্লেখ করেছেন।
রাধা বল্লভ মন্দিরের সামনে বিরাট নাট মন্দির। রাধা বল্লভ গঙ্গার ধারে কদম গাছ এখন আছে। কথিত আছে সেই গাছটিতে প্রতি বছর দোল পূর্ণিমার দিন একটি মাত্র ফুল ফোটে। সেই ফুল তুলে রাধা বল্লভের চরনে নিবেদন করা হয়। মন্দির প্রাঙ্গণের বাইরে দেয়ালে রয়েছে শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর মুর্তি এবং ভীষ্ম ও কৃষ্ণ অর্জুনের মহাভারতের যুদ্ধের মুর্তি।
মাঠে রাস মঞ্চ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights