বাংলায় ‘স্নাতক’ বলে যে শব্দটা কোথায় থাকে এসেছে জানান??
এককালে আমাদের এই বাংলায় একটা ইউনিভার্সিটি ছিল। আমাদের পাল রাজারা ১৩০০ বছর আগে এই ইউনিভার্সিটি তৈরি করেছিল । তখন বিশ্ববিদ্যালয়কে বিহার বলা হতো। বিহারের নাম ‘সোমপুর বিহার’।
ইউরোপীয়রা নিজেদের সবচেয়ে ড়
বেশি সভ্য দাবি করলেও, পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন সভ্যতাগুলোর দুইটি সভ্যতা গড়ে উঠে ভারত বাংলাদেশ উপমহাদেশে, সে গুলো ছিলো হরপ্পা মহেঞ্জদারোতে ও গঙ্গারিডি সভ্যতা। সোমপুর বিহার এই যে বিহারটি দেখা যাচ্ছে, এই বিহারের ইটগুলি জানে কতোজন গ্র্যাজুয়েট ছাত্র এখানে তপস্যা করে গেছে দিনরাত । এই বিহারটি ইউনেস্কোর হিসেবে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বিহার, যেটার আয়তন নালন্দা মহাবিহারের চেয়েও বড় ।
পালবংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপাল দেব (৭৮১-৮২১) অষ্টম শতকের শেষের দিকে এই বিহার তৈরি করছিলেন। স্যার আলেকজান্ডার কানিংহাম ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে এই বিশাল স্থাপনা আবিষ্কার করেন।
বাংলায় ‘স্নাতক’ বলে যে শব্দটা আছে সেটা এসেছেও এইসব ছাত্রদের কল্যাণেই । গুরু যখন তার সমস্ত বিদ্যা ছাত্রকে শিখিয়ে দিতেন তখন ছাত্র অনুমতি পেতো গুরু যে দীঘিতে স্নান করে সেখানে স্নান করার । সেই ‘স্নান’ থেকেই বাংলায় এসেছে ‘স্নাতক’ শব্দটি!
বিপুলশ্রীমিত্রের নালন্দা তাম্রশাসনে উল্লিখিত আছে যে, তাঁর পূর্বপুরুষ করুণাশ্রীমিত্র সোমপুর মহাবিহার ত্যাগে রাজী না হওয়ায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে প্রাণ হারান। বহিরাগতদের আক্রমণে ভয়ানকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার একশ বছর পরে বিপুলশ্রীমিত্র সংস্কার করেন, এই বিহারের হূতগৌরব পুনরুদ্ধার করেন। তিনি এখানে একটি তারা মন্দিরও নির্মাণ করেন। তবে কালের নিয়মে শেষ পর্যন্ত তেরো শতকে এ এলাকা মুসলমানদের অধিকারে এলে এটি চূড়ান্তভাবে পরিত্যক্ত হয়।
এই বিহার যদি টিকে থাকতো তাহলে আমরা হাভার্ড, অক্সফোর্ড, ক্যামব্রিজ মতো পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গর্বিত মালিক হতাম ।
#banglavlog #Bangladesh