কলমে -আকাশ বিশ্বাস
১৭৪৩ সালে নন্দকিশোর মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, কুমারহট্টের স্থানীয় জমিদার নন্দগোপাল রায়। এখানে একটি নয় রয়েছে চারটি মন্দির। চারটি টেরাকোটা সম্বলিত মন্দিরের সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে নন্দকিশোর মন্দির। মন্দিরের মূল প্রবেশদ্বারের বাঁদিকে টেরাকোটা অলংকৃত মন্দিরটিই ছিল মূল নন্দকিশোর মন্দির। মন্দির গাত্রে রামায়ণের বিভিন্ন কাহিনী বর্ণিত রয়েছে। মন্দির প্রাঙ্গণে সমস্তটা জুড়েই অবহেলার ছাপ দৃশ্যমান।
ক্রমশঃ ক্ষয়প্রাপ্ত টেরাকোটার অলংকরণযুক্ত প্যানেলগুলো থেকে অনুমান করা যায় তার ফেলে আসা অতীতের গৌরবোজ্জ্বল দিনগুলি। মন্দিরগাত্রে একসময় অতি উৎকৃষ্ট মানের টেরাকোটা ফলকের কাজ করা ছিল তা সহজেই অনুমেয় হয়। একদা শিল্পী তাঁর কত অক্লান্ত শৈল্পিক নিপুণতায় তৈরি করেছিলেন এ নয়নাভিরাম দৃষ্টান্ত! তা অনুধাবন করা যায়।
ডেভিড ম্যাক্কাচন সাহেব তাঁর আজীবনের সঞ্চয় ‘Brick Temples of Bengal’ বইতে এই মন্দিরের বিস্তারিত আলোচনা করেছিলেন।
বাকি তিনটি শিব মন্দির। কালের করালগ্রাস ও রক্ষণাবেক্ষণের যথাযথ অভাবে বর্তমানে সামনের দুটি মন্দিরকেই চিহ্নিত করা যায়। প্রাঙ্গণের ভিতরের বাকি মন্দির দুটি বৃক্ষ কবলিত ও প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত! টেরাকোটা প্যানেল খসে পড়েছে কবেই! বর্তমানে আগাছা পরিপূর্ণ ইঁটের খাঁচা দাঁড়িয়ে রয়েছে কোনক্রমে। সরকারের চূড়ান্ত ঔদাসীন্য ও অবহেলায় হারিয়ে যেতে বসেছে বাংলার এক প্রসিদ্ধ পুরাকীর্তি!
বারেন্দ্র গলি (হালিসহর)
উত্তর চব্বিশ পরগণা
আশ্বিন, ১৪৩১
ছবি: ©️আকাশ বিশ্বাস