কলমে : হারাধন ভট্টাচার্য্য। “
খুদি কো কর বুলন্দ ইতনা কে-
হার তকদির সে প্যাহেলেখোদা বন্দোঁ সে পুছে
বাতা তেরি রেজা কেয়া হ্যাঁয়”।
অর্থাৎ – তুমি তোমার কর্মের দ্বারা নিজেকে এতো শক্তিশালী করে গড়ে তোলো যাতে সয়ং ঈশ্বর তোমার ভাগ্যলেখার আগে তোমাকে জিজ্ঞাসা করেন।”বলো তোমার কী ইচ্ছা”উপরে লিখিত এই পংক্তি কটি আল্লামা মহম্মদ ইকবালকে খুদিবাদের অর্থাৎ কর্মে বিশ্বাসী কবি হিসেবে স্বীকৃত দিয়েছিল। তিনি সব সময় কর্মের উপর মানুষের ভাগ্য তৈরী হয় এ কথা বিশ্বাস করতেন । যদিও তাঁকে নিয়ে বিতর্ক ও ছিল । তিনি তথাকথিত এই গনতান্ত্রিক নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলছিলেন। ” ইহাঁ বন্দোঁকো গিনা যাতা হ্যাঁয়
তোলা নেহি করতা” ।
অর্থাৎ এই নির্বাচন পদ্ধতিতে নির্বাচিত ব্যক্তির বুদ্ধি বিবেচনা, শিক্ষাদিক্ষার কোন বিচার করার সুযোগ নেই । শুধুমাত্র ঐ ব্যক্তিকে বেশি সংখ্যক মানুষের সমর্থন পেলেই হবে।অর্থাৎ তিনি বলেছেন কোনো দুজন ব্যক্তি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাদের একজন সৎ,শিক্ষিত সজ্জন আর একজন এর বিপরীত । কিন্তু ভোটে সেই বিপরীত চরিত্রের ব্যক্তি একটি ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হয়ে গেলেন। শিক্ষিত ,সৎ, সজ্জন ব্যক্তি পরাজিত হলেন। এবার ঐ বিজয়ী ব্যক্তি মানুষের কোন ভালো করবেন ? তার না আছে শিক্ষা না আছে সততা তার দ্বারা সমাজের কোনো উপকার সম্ভব নয়। মাথা গুনতিতে তার সমর্থক বেশি এর জন্য তিনি নির্বাচিত সুতরাং এতে সমাজের কোনো উপকার হতে পারে না। তাই তিনি বলেছেন যেখানে মানুষের মাথা গোনা হয় তার ওজন করা হয় না সেই পদ্ধতি তিনি বিশ্বাস করেন না। এর জন্য তাঁকে অনেক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল তবুও তিনি তাঁর মতের থেকে সরেননি। তাঁর এই কথা আজ কত প্রাসঙ্গিক সে কথা কি আমরা অস্বীকার করতে পারি। তিনি ই প্রথম উর্দুতে গায়ত্রী মন্ত্রের অনুবাদ করেছিলেন।পুরুষত্বম শ্রীরামচন্দ্র কে তিনি ইমামে হিন্দ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন।
তিনি আরও বলেছিলেন
“খাঁকে ওতন কা মুঝকো/ হর যাররা দেবতা হ্যা ” অর্থাৎ “ভারতবর্ষের প্রতিটি ধূলিকণা আমার কাছে দেবতা”।
শহীদে আজম ভগৎ সিং মুখের সেই ধ্বনি ‘ইনকেলাব জিন্দাবাদ”ইকবাল তাঁর গ্রন্থ “জুবরে আজম ” এ প্রথম লেখার সাহস দেখিয়েছিলেন ।তাঁর নিম্নক্ত এই বিখ্যাত পংক্তিকটি শোনেননি বা জানেনা এমন ভারতবাসী নেই। ” সারে জাহাঁসে আচ্ছা হিন্দোস্তাঁ হামারা হাম বুলবলে হ্যাঁ ইসকী ইয়ে গুলসিতাঁ হামারা হামারসারে জাহাঁসে আচ্ছা হিন্দোস্তাঁ হামারা “।———————————————-
—-——————–