ইতিহাস নিয়ে যারা চর্চা করেন তারা জানেন, যেকোনো জায়গার নামের পিছনে লুকিয়ে থাকে একটা অজানা গল্প আর সেইটা খুঁজে বের করা অঞ্চলে ইতিহাস।
আজ একটা তেমন গল্প বলতে চাইছি।একটা মন্দির, আর একটা শ্মশানের গল্প যা সাহায্য করে আজকের কলকাতার ইতিহাস জানতে।নিমতলা একটা সুপ্রাচীন জায়গা তাই প্রমান করবে কলকাতা জন্মদাতা জবচার্নক নয়।
নিমতলা শুধু শ্মশান নয়, বরং এটি শ্মশান ঘাট। কিন্তু কেন নিমতলা ? প্রচলিত কিংবদন্তী লোককথা বা কলকাতার ইতিহাস নিয়ে লেখা বই গুলো বলে ঘাটের ধারেই থাকা একটা বিরাট নিমগাছ থেকে এই অঞ্চলের নাম নিম তলা।
ব্রিটিশ ইতিহাস বলে জোব চার্নক, কলকাতার তথাকথিত রূপকার, তিনি ১৬৯০ সালের ২৪শে আগস্ট নামেন সুতানুটিতে । এক নিমগাছের তলায় তিনি লোকজন সমেত আশ্রয় নেন । লোকজন বলে এই নিমগাছই নিমতলার সেই প্রাচীন গাছ ।
নিমতলা শশ্মান অনেক প্রাচীন, বাংলার প্রবাদ “ঘাটের মরা” কথাটি এখান থেকেই এসেছে। কারণ এখানে মুমুর্স্য রুগীদের, গঙ্গার জলে অধের্ক বা কিছুটা ডুবিয়ে রেখে যাওয়া হতো। নিমতলা ঘাট নির্মাণ করেছিলেন লোক মতা রানি রাসমণির স্বামী, রাজা বাবু রাজচন্দ্র মার (দাস)। তিনি এই শ্মশানের দক্ষিণে গঙ্গাযাত্রীদের থাকার জন্য একটি পাকা ঘরও তৈরি করেছিলেন। তবে এই প্রবাদ বাক্য থেকেই বোঝা যায়, নিমতলা জায়গাটি অনেক আগে থেকেই এই অঞ্চলে জন প্রিয় ছিল।
নিমতলা ঘাট স্ট্রীট ধরে গঙ্গার দিকে যেতে শ্মশানের ঠিক আগে চক্ররেলের লাইন, রেললাইনেরও অনেকটা আগে ডানদিকে এক লাল রঙের মন্দির সেটা আনন্দময়ী কালী মন্দির। এটি ইতিহাস লোককথা নির্ভর। তবে এই মন্দিরটির বয়স ৩৫০ বছরের ওপরে বলে দাবি করা হয়।এই কালী বিগ্রহটি কিন্তু শ্মশানকালী। শ্মশানতো দূরে এ মন্দির থেকে। আসলে প্রকৃত শশ্মান ছিলো আগে এখান থেকেই। গঙ্গা এখান থেকেই বয়ে যেতো।
তবে এই নিম তলা নামের উৎস খুঁজতে গেলে একটি মসজিদ গল্প ও বলতে হয়।
আনন্দময়ী কালী মন্দিরের ঠিক আগেই আছে নিয়ামৎতুল্লাহ্ মসজিদ। নিমতলা আর নিয়ামৎতুল্লাহ্ প্রায় একই রকম শুনতে। অনেক বলেন নিয়ামৎতুল্লাহ্ থেকেই নিমতলা নাম টি এসেছে।