একটা আস্ত গ্রাম যে এমন রঙিন হতে পারে, তা নিজের চোখে না দেখলে আপনার বিশ্বাসই হবে না।
সেই গ্রামের সকলেই শিল্পী। তাই প্রত্যেকের নামের সঙ্গেই যুক্ত হয়েছে ‘চিত্রকর’ শব্দটি। এই বাংলার সংস্কৃতিকে পটচিত্রে ধরে রাখা গ্রামটির অবস্থান পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলায়। নয়াগ্রাম। বাংলার পটশিল্পকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেওয়া এক নাম।
নয়াগ্রামের প্রতিটি ঘরের দেওয়াল, দালান চিত্রিত। নয়াগ্রামে পা রাখলেই আপনার চোখে শুধুই ফুটে উঠবে পটচিত্রে রঙিন, বর্ণময় বাংলার ইতিহাস, পুরাণ, সংস্কৃতি। পটচিত্র শুধু ছবি আঁকাই নয়, তার সঙ্গে থাকে পটের গানও। শিল্পীরা আগে গান বাঁধেন। তার পরে সেই গানের দৃশ্য আঁকা হয়।
পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা (Pingla) ব্লকের নয়া গ্রাম। যেখানে গত ন’বছর ধরে তিন দিনের জন্য তৈরি হয় এক মায়ার জগৎ। নাম ‘পট মায়া’। পটচিত্রের নানা পসরা সাজিয়ে বসেন নয়া গ্রামের ‘চিত্রকর’রা।
অন্যান্য মেলার মতো স্টল করে নয়, তিন দিনের জন্য নিজেদের বাড়ির বারান্দা বা দালানকেই তাঁরা সাজিয়ে তোলেন পটচিত্রের সামগ্রী দিয়ে। শুধু পটের স্ক্রলই নয়, বর্তমানে এই শিল্প দেখা যাচ্ছে শাড়ি, দোপাট্টা, টি-শার্টেও। এ ছাড়াও কাঁসার থালা, ট্রে, কেটলি, ছাতা, কুলো, বেতের তৈরি ছোট ছোট বাক্স— সবেতেই জায়গা করে নিয়েছে এই অঙ্কনশৈলী।
কীভাবে যাবেন নয়াগ্রাম-
গাড়িতে- কলকাতা থেকে N.H – 6 ধরে ডেবরা, সেখান থেকে বালিচক হয়ে পিংলার নয়াগ্রাম।
বাসে- কলকাতা থেকে খড়গপুরের বাস ধরে ডেবরা। সেখান থেকে ময়নার বাস ধরে নয়াগ্রাম।
ট্রেনে- হাওড়া থেকে খড়গপুরগামী ট্রেনে বালিচক স্টেশন। সেখান থেকে বাস কিংবা ট্রেকারে নয়াগ্রাম।