google-site-verification=r3lYzE3jI5XC8igrXRKdm9HAWALrzmx6coPmyeHNww4
Spread the love

দশমহাবিদ্যার, প্রথম বিদ্যা হলেন কালী বা কালিকা। কালী মা এক রূপ হলেও শাস্ত্র মতে দেবী কালিকা হলেন ব্রহ্মময়ী। তিনি নিরাকার ও সাকারও উভয় রূপেই অবস্থান করেন এই বিশ্বে । মহাবিদ্যা বলা হয়, মা কালীর ধ্যান বর্ণিত কালী মা, এই স্থূল রূপ একটি রূপক মাত্র। শাস্ত্রজ্ঞগণ মনে করেন কতান্ত্রিক কুল দীক্ষা ছাড়া এই কালীরূপ বা বিদ্যার প্রকৃত মর্ম উপলব্ধি অসম্ভব।
কালী সব রূপই শ্মশানবাসিনী। তবে গৃহস্থের বাড়িতে তার আরাধনা মূলত দক্ষিণা কালিকা বা রক্ষাকালী রূপেই হয়। তবে প্রচলিত নিয়ম অনুসারে শ্মশানকালীকে মানুষ শ্মশানেই পুঁজো করতে অভ্যস্ত।
আজ এক মহা শ্মশানে পূজিত মায়ের কথা বলবো।

গন্ধেশ্বরী নদী বাঁকুড়া শহরের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে । সেই গন্ধেশ্বরীর পাশেই আছে লক্ষ্যাতড়া মহাশ্মশান। কথিত আছে এক সময় দূরদূরান্ত থেকে সাধুরা এসে এখানে পুজো করতেন। এই মাতৃ পূজায় রয়েছে দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের অংশগ্রহণকারী বিপ্লবীদের ছোঁয়াও।শোনা যায় ব্রিটিশ আমলে বেনারস থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল মা ভবতারিণীর মূর্তি। সেই মূর্তি পূজিত হতেন মা এক ডাকাতদের কাছে। পর পূজিত হতো বিপ্লবীদের গোপন দেড়ায়। দ্বারকেশ্বর নদের পার থেকে লক্ষ্যাতড়া মহা শ্মশানে মায়ের সেই মূর্তি নিয়ে আসা হয় । ৩০০ বছরের পুরনো এই কালীমন্দিরের কালী খুবই জাগ্রত। তবে মন্দিরটি আনুমানিক ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে তৈরি।কালী প্রতিমা পাথরের।পুজোর আগে এখন সেই প্রতিমায় রঙের প্রলেপ পড়ছে।

তবে এই মা ভবতারিনীর কাছেই ভক্তেরা একদম শাস্ত্রমতে পুজো দিতে পারবেন। কিন্তু অপরদিকে শ্মশান কালী মন্দিরে পুজো হয় তন্ত্রমতেও।
লক্ষ্যাতড়া মহা শ্মশানে কৌশিকী অমাবস্যার রাতে মা পূজা পান তন্ত্র মতে এবং শাস্ত্র মতে ডাকাত কালী এবং শ্মশান কালী রূপে ! কৌশিকী অমাবস্যার রাতে বাঁকুড়ার এই বিশেষ মহাশ্মশানে চিত্রটা একেবারে অন্যরকম হয়ে যায়। একই শ্মশান প্রাঙ্গণ অমাবস্যার রাতে দুই ধরনের পুজো। তন্ত্র মতে এবং শাস্ত্রমতে পূজিত হন মা কালী।

এই বিশেষ অমাবস্যাতেই আসলে সাধক বামাক্ষ্যাপা সাক্ষাৎ দর্শন পেয়েছিলেন মায়ের। মহাশ্মশানে তন্ত্রমতে পূজিত হয়ে আসছেন শ্মশান কালী।মৃতদেহ সৎকারের সঙ্গেই চলে পুজোর আয়োজনও এখানে। এখানে তন্ত্রমতে পুজো করেন মদন খ্যাপা। কথিত আছে পূজারী নিজের হাত কেটে রক্ত দিয়ে মায়ের পুজো করেন। তাছাড়া মায়ের ভোগ হিসেবে দেওয়া হয় মাছ, মাংস ও মদ। বলিদান প্রথাও এখানকার চিরাচরিত।
এছাড়া এখানে কালীপুজোয় শুশুনিয়া পাহাড়ের ঝর্ণা থেকে জল নিয়ে আসেন ভক্তরা। পুজোর দিন ভোরে বেরিয়ে তাঁরা হেঁটে বাঁকুড়ায় আসেন। পাঁচবাগা এলাকা থেকে শোভাযাত্রা করে ঘট নিয়ে আসেন ভক্তরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights