google-site-verification=r3lYzE3jI5XC8igrXRKdm9HAWALrzmx6coPmyeHNww4
Spread the love

হুগলি জেলার সুপ্রাচীন বর্ধিষ্ণু গ্রাম হরিপাল। হরিপাল অঞ্চলের একটি ছোট জনপদ শ্রীপতিপুর। এই গ্রামের অধিকারী পরিবারেই দীর্ঘদিন যাবৎ পূজিতা মা সবুজ-কালী। দেবীর এমন রূপের নেপথ্যে অবশ্য এক অলৌকিক কাহিনি রয়েছে। দেবীর প্রতিষ্ঠা হয়েছিল বটকৃষ্ণ অধিকারী। অধিকার পরিবার বৈষ্ণবমতে দীক্ষিত। বাড়িতেই নিত্য সেবা পান নারায়ণ। অধিকারী বাড়ির মা কালী ব্যাতিক্রম। এখানে মা গায়ের রঙ কচি কলাপাতার মতো সবুজ। লোক কথা অনুযায়ী দরিদ্র বৈষ্ণব পরিবারের বটকৃষ্ণ অধিকারীর বৈষ্ণব সুলভ আচরণ ছোট থেকেই। সংসারে মতি নেই, মাঠে ঘাটে শ্মশানে ঘুরে বেড়াতেন। কথিত তিনি মাঠে গরুর খোটা বাঁধার সময়ে পিছন থেকে সাদা বস্ত্র পরিহিত সন্ন্যসী বলেদিয়ে ছিলেন কোথায় কখন তাঁর দীক্ষা হবে। তারপর তিনি শ্মশানে সাধনা করে সিদ্ধি লাভ করে স্বপ্নাদৃষ্ট হন। মা কালির মন্দির নির্মাণের মনস্থ করেন। কুলীন বৈষ্ণব তিলকসেবা গোবিন্দের নাম না করে জল স্পর্শ করেন না। তবুও সমাজের বাধা পেরিয়ে বাড়িতে ঘট স্থাপন করছিলেন। কারণ স্বপ্নাদেশ পান মায়ের মূর্তি স্থাপন করার । বাংলার ১৩৫৭ সালে রটন্তী কালী পুজোর দিন প্রতিষ্ঠিত হলেন এই গ্রামে।বটকৃষ্ণ রটন্তী কালিপূজায় প্রতিষ্ঠা করেন কালী মুর্তি। তখন থেকে বছরভর বৈষ্ণব বাড়িতে পূজিতা হন মা কালি। দেবীকে আমিষ ভোগ দেওয়া হয়। প্রিয় ভোগ ইলিশ মাছের পদ। প্রতিবছর দেবীকে ইলিশ মাছের ভোগ দেওয়া হয়। দেবীর পুজো ফুল জুঁই। দেবীর পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য বাঁশি, দেবী এখানে বাঁশি বাজিয়ে শোনানো হয়।বলা হয় বটকৃষ্ণের বাঁশিতে মোহিত হয়ে ধরা দিয়েছিলেন কৃষ্ণকালী। সবুজ কালীর, না কৃষ্ণকালীর তথা অভিন্ন ব্রহ্মের রূপ।বটকৃষ্ণ ঠাকুর স্বপ্ন দেখেছিলেন নিরাকার বিন্দু হতে সাকার হয়ে বিন্দুতে মেলান মা। মায়ের অপূর্ব শোভা! কালো বা নীল নয়, নব দুর্বাদলঘন শ্যাম ও শ্যামা এক সাথে মিশে যাচ্ছেন ও লয় হচ্ছেন বারবার। খড়গ ও ত্রিশূল একই সঙ্গে।সহজ সরল ভাষায় বললে বলতে হয়, শ্মশানে সাধনা করতে গিয়ে বটকৃষ্ণ অধিকারী , তিনি দেখতে পান কচি দুর্বা ঘাসের ওপর শ্যাম বা শ্রীকৃষ্ণ এবং শ্যামা একসঙ্গে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁরাই বটকৃষ্ণকে বলেছিলেন, শ্যাম এবং শ্যামা এক ও অভিন্ন। এই কথা বলার পর সেই শ্যামের মূর্তি ও শ্যামার মূর্তি পরস্পরের সঙ্গে মিশে যায়। তৈরি হয় এক দেবীমূর্তি। যে মূর্তির বর্ণ সবুজ। তাই এখানে সবুজ রঙের কালি মূর্তি পূজিত হয়।স্বয়ং বামদেবের সঙ্গে এই পরিবারের যোগ রয়েছে। মায়ের মন্দিরে বামদেবের ব্যবহৃত কিছু সামগ্রী এখনও রয়েছে। মন্দির টিতে যেতে পারেন সহজেই,হাওড়া থেকে তারকেশ্বরগামী ট্রেনে নালিকুল ষ্টেশনে নেমে অটোয় পথ মিনিট দশেকের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights