google-site-verification=r3lYzE3jI5XC8igrXRKdm9HAWALrzmx6coPmyeHNww4
Spread the love

প্রাচীন বাংলারগ্রাম লৌকিক গানের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য ধারা হলো ‘হলুই গান’ বা হোলবোল গান। এ গান এখন বিলুপ্তপ্রায় ।আশার কথা হলো এই গান আবার গাও হচ্ছে কিছু কিছু গ্রামে। সাধারণত শীতকালীন গান বলা যেতে পারে। পৌষ মাস নরে শীত লাঘব করতে গ্রামের ছেলে ছোকরা এমনকি বুড়োরা দল বেঁধে এই গান গায়। এক দলে ৮ থেকে ১০ জনের সদস্য থাকে।পাড়ায় পাড়ায় সন্ধ্যাকালে এই গান গেয়ে বেড়ায় এঁরা। সকালে দলের দু’একজন গান গাওয়া বাড়িগুলিতে গিয়ে চালডাল সংগ্রহ করে এক জায়গায় জমা রাখে। এভাবে সারা পৌষ মাস ধরে চলে তাদের হলুই গান ও চালডাল সংগ্রহ। মাসের শেষ দিনে ,অর্থাৎ পৌষ সংক্রান্তিতে গ্রামের সকলের মঙ্গল কামনায় কোথাও ‘বাস্তুদেবী’ কোথাও মা-বসুমতীর কোথায় কুমির পুজো করা হয়। পরে খিচুড়ি রান্না করে সকলে মিলে খাওয়াদাওয়া করে আনন্দে শেষ হয় হলুই-পার্বণ। এ গানের দলে বিশেষ কোনো বাদ্যযন্ত্র থাকেনা । তবে মাথায় ও গায়ে টিনের চাকতি লাগানো বাঁশের লাঠি থাকে।এটি বিশেষ ধরনের লৌকিক উপায় তৈরি বাদ্য যন্ত্র।হলুই দলের সকলের হাতে থাকে এই ধরনের লাঠি। এই বিশেষ ধরণের লাঠি মাটিতে আস্তে আস্তে আঘাত করলে চাকতির শব্দের তালে বেশ জমে ওঠে হলুই গান। অনেক মনে করেন গাজী পীর কালু-গাজীর অনুগামীদের হাত ধরে বাংলায় এই হলুই গান এসেছে ।
তবে কেউ কেউ দাবি করেন হলুই গান বা হোলবোল গান প্রথম শুরু করেন নদীয়ার কৃষ্ণগঞ্জের কৃষ্ণপুরের অজিত ঘোষ ।আগেকার দিনে বাংলার লোক সমাজে রাখাল বালকেরা মাঠে গরু চরাতে যেত এবং তারই পাশাপাশি তারা বিভিন্ন রকমের গান বানাতো আর সন্ধ্যাবেলায় গরু নিয়ে বাড়ি ফিরে তাদের গোয়ালে উঠিয়ে দিয়ে, এইসব বালকেরা ও আশেপাশের লোকজন খোল করতাল ও খঞ্জনি নিয়ে বেরিয়ে পড়তো বাড়ি-বাড়ি গান করতে। এবং চাল ডাল সংগ্রহ করতেন।

সহজ কথা ও সুরে গ্রাম বাংলার নানা লোকগাথা নিয়ে মুখে মুখে এই হলুই গান রচিত । তবে সাধারণত অধিকাংশ পদ বা গান জুড়েই রয়েছে কৃষ্ণ-রাধার প্রেম কাহিনী নিয়ে নানারকম খুনসুটি ও রসিকতা ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights