আমার জানি ৩৬৫ দিনে আমাদের বছর । কিন্তু আসলে সেই হিসেবে একটা অসঙ্গতি থাকে যায় ক্যালেন্ডারে, তাই প্রত্যেক চার বছর পর , সেটিকে সম্বন্বয় করতে লিপ ইয়ারের আবির্ভাব। বলা হয় প্রাচীন সুইডেন একটি ডাবল লিপ ইয়ারের অংশ হিসেবে ১৭১২ সালের ক্যালেন্ডারে ৩০শে ফেব্রুয়ারি যুক্ত করেছিল।১৭১২ সালে ,কারণ বছরের হিসাব মিলাতে না পারায় অনিশ্চিত হিসাব হিসেবে ৩০ ফেব্রুয়ারিকে ধরা হয়েছিলো।কিন্তু ইতিহাস বলছে রোমান নাগরিকরা আবিষ্কার করেছিলেন, সৌর ক্যালেন্ডার সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় সৌর বছরের সাথে। তাই নতুন ক্যালেন্ডার তৈরির করার প্রয়োজন মনে করে তা তৈরি করা হয়। রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার প্রথম এটির ধারণা দেন ।জুলিয়াস সিজার জ্যোতির্বিজ্ঞানী আলেকজান্দ্রিয়ান সোসিজেনেসকে রোমান ক্যালেন্ডারের একটি বিকল্প তৈরি করার কথা বলেছিলেন । সূর্যের চারিদিকে পৃথিবীর ঘুরপাক খাওয়ার গতিবিধির উপর নির্ভর করে এই ক্যালেন্ডারের তৈরি করতে বলা হয় ।পৃথিবী সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করতে এতে ৩৬৫ দিনের সাথে পাঁচ ঘণ্টা, ৪৮ মিনিট এবং ৫৬ সেকেন্ড বেশি সময় লাগে। সোসিজেনেস একটি ক্যালেন্ডার তৈরির প্রস্তাব করেছিলেন,এই বাড়তি সময়কে করতে সৌর বছরের সঙ্গে মিল ঘটাতেই প্রতি চার বছরে ৩৬৫ দিনের সঙ্গে একটি অতিরিক্ত দিন যুক্ত করা হয়।এর প্রবর্তক জুলিয়াস সিজারের সম্মানে এই নামকরণ করা হলোজুলিয়ান ক্যালেন্ডার। তবে ওই ক্যালেন্ডারে কিছু ত্রুটি থাকার কারণে ১৫৮২ সাল নাগাদ জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের জায়গা নেয় বর্তমানের গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার। জুলিয়ান ক্যালেন্ডারে কিন্তু মার্চ মাস থেকে বছর শুরু হত । রোমানরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যেহেতু প্রতি চার বছরে একটি অতিরিক্ত দিনের প্রয়োজন ছিল, তাই ফেব্রুয়ারিতে সেই দিনটিকে যুক্ত করা হবে। কারণ তখন বছরের শেষ মাস ছিল এটি।ল্যাটিন বাক্য থেকে এসেছে লিপ নামটি । যার অর্থ মার্চ মাস শুরুর ছয় দিন আগে,এই বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে চিহ্নিত করা হয় ।রোমান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ঐ দিনটিকে লিপ ইয়ার হিসেবে পালন করা হত । বাংলায় তার অর্থ অধিবর্ষ। পরে ত্রয়োদশ পোপ গ্রেগরির সিদ্ধান্তে, লিপ ইয়ারের অতিরিক্ত দিনটি হবে ২৯শে ফেব্রুয়ারি।ব্রিটিশ লেখক জন রোনাল্ড রিয়েল টলকিয়েন তাঁর ফ্যান্টাসি উপন্যাস ‘দ্য হবিট এবং দ্য লর্ড অফ দ্য রিংসে’ বলেছেন হবিটরা একটি ক্যালেন্ডার তৈরি করে যেখানে ফেব্রুয়ারি মাস ছিল ৩০ দিনে।