google-site-verification=r3lYzE3jI5XC8igrXRKdm9HAWALrzmx6coPmyeHNww4
Spread the love

।। হারাধন ভট্টাচার্য্য।। ( নিবন্ধ)

মির্জা আসাদুল্লাহ খাঁ ( বেগ) গালিব।
গালিব তাঁর ডাক নাম বা কবি নাম। গালিব কথার অর্থ সর্বোচ্চ এবং আসাদ কথার অর্থ সিংহ।
গালিব নামেই তিনি উর্দু এবং ফার্সী কাব্য সাম্রাজ্যের সম্রাটের আসনে প্রতিষ্ঠিত। আমাদের যেমন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর উর্দু সাহিত্যের তেমনি মির্জা গালিব।
মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফরের সভা কবি ছিলেন তিনি, অতএব স্বাভাবিক কারণেই তিনি ছিলেন একজন মেজাজী মানুষ। তবে বদ মেজাজী নন, রাজ মেজাজী।
১৮২৮/ ১৮২৯ সালে তাঁর ইংরেজদের সাথে তাঁর মাসোহারা সংক্রান্ত একটি মামলায় জন্য তাঁকে এই শহর কলকাতায় আসতে হয়েছিল এবং এখানে সেই সময় প্রায় বছর খানেক তাঁকে থাকতে হয়েছিল। সেই সুবাদে তিনি এখানকার বহু কবি সাহিত্যিকদের সাথে ওঠাবসা,মেলামেশা করেছিলেন এবং অনেক মুশায়রা বা কবি সন্মেলনে তিনি উপস্থিত হয়ে কবিতা পাঠে অংশ নিয়েছিলেন। তাই এখানে তাঁর অনেকের সাথে প্রগাঢ় বন্ধত্ব গড়ে ওঠে। ঐ একবছর কলকাতায় থাকা কালীন এখানকার বহু কিছুকে তিনি ভালোবেসে ফেলেছিলেন এবং অনেক কিছু দেখে তিনি মুগ্ধ ও হয়েছিলেন । এখান থেকে ফিরে গিয়ে ও তিনি এই শহর কলকাতাকে ভুলতে পারেননি এবং তিনি তাঁর বন্ধুর কাছে লেখা একটি চিঠিতে সে কথা মুক্ত কন্ঠে স্বীকার করেছেন। তিনি দিল্লীতে ফিরে যাবার পর এখানকার এক বন্ধু তাঁকে একটি চিঠি লেখেন সেই চিঠি পেয়ে গালিব এতটাই আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলেন যে, কলকাতা কে নিয়ে তিনি একটি কবিতা লিখে ফেলেছিলেন।
তাঁর কবিতার কয়েকটি পংক্তি ছিল
” কলকাত্তা কা যো জিকর কিয়া
তুনে হাম নসিন,
এক তির মেরে সিনে পে মারা
কে হায় হায়।।
অর্থাৎ, কলকাতার কথা স্মরণ করে বন্ধু তুমি আমার হৃদয়ে তির মেরেছ ।
প্রসঙ্গত বলি ১৯৯৭ সালে মহা সমারোহে মির্জা গালিবের ২০০ বছর পালিত হয়েছিল কলকাতায়। সেই সময় আমি কলকাতার মুসলিম ইনস্টিটিউট হলে গালিব বিষয়ক একটি একজিবিশনে অংশগ্রহণ করি ।সেখানে উপরের ঐ কবিতাটির বাংলায় ভাবানুবাদ করেছিলাম । তা ছিল এমন

বন্ধু তুমি করলে কি এ
জাগিয়ে দিলে মনে
কলকাতা কে এক নিমেষে
লক্ষ্য স্মৃতির সনে।
কলকাতা মোর বুকের মাঝে
করুন সুরে বাজে
এতদিন পরে ও তা
ভুলতে পারি না যে।
তির বিঁধেছে হৃদয় আমার
রক্ত ঝরা সুখে
হায়রে দেখি কলকাতা কে

চোখের ই সম্মুখে।।

Verified by MonsterInsights