শীতকাল মানেই জাদুঘর ঘুরতে যাওয়া চাই। কিন্তু বলতে সঠিক কী বোঝায়? সাধারণ অর্থে, জাদুঘর হল এমন একটি জায়গা যেখানে বিভিন্ন ঐতিহাসিক উপাদানের সংগ্রহশালা, যেখানে ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক, বৈজ্ঞানিক, শিল্প-বিষয়ক প্রভৃতি বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন সংরক্ষণ করা থাকে।তা জনসাধারণের উদ্দেশ্যে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়। সহজ ভাষায় বিভিন্ন পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন সংগ্রহ করে সেগুলি যেসব প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষণ করে রাখা হয় সেসব প্রতিষ্ঠান বা ভবনকে জাদুঘর বলা চলে । তাই অভিধান খুললে দেখা যাবে, যে-ঘরে নানা অত্যাশ্চর্য জিনিস বা প্রাচীন জিনিস সংরক্ষিত থাকে, তাকে ‘জাদুঘর’ বলবো।বাংলা ‘জাদুঘর’ শব্দটি, আরবি ‘আজায়র্ ঘর’ বা ‘আজায় খানা’ শব্দটির থেকে এসেছে বলতে পারেন। তুলনীয়। সহজ বাংলায় ‘জাদুঘর’ শব্দটির অর্থ হল, “যে গৃহে অদ্ভুত অদ্ভুত পদার্থসমূহের সংগ্রহ আছে।”
‘জাদুঘর’ শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ হল ‘Museum’ (মিউজিয়াম)।আর ‘মিউজিয়াম’ শব্দটির মূল উৎস হল প্রাচীন গ্রিক শব্দ Mouseion (মউসিয়ন)। Mouseion (মউসিয়ন) অর্থ হল মিউসদের মন্দির।
জাদুঘরের তৈরির প্রাথমিক উদ্দেশ্য ও কাজ হল, দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন দুর্লভ ঐতিহাসিক নিদর্শনসমূহ সংগ্রহ করে তা সংরক্ষণ করা। আসলে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলি সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করা জরুরী । ইতিহাস রচনার জাদুঘর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তবে বাংলার ইতিহাস চর্চার বিষয়ে সরকার বোধহয় খুব উদাসীন। তাই গঙ্গারিডি সভ্যতার ইতিহাস সম্পর্কে এখনো মানুষের কাছে কোন ধারণা নেই। এমনকি বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যময় লোকসংস্কৃতির কোন খবর নেই।
তবে জানেন কি আমাদের কোলকাতা, এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এই অভাবটা মেটাতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনেক গুলো মিনি জাদুঘর তৈরি হয়েছে। যেমন উওর কোলকাতায় সৌমেননাথের বাড়ি, বারুইপুর উজ্জ্বল সর্দার আর সাগর চট্টপাধায়ের বাড়ি, জয়নগরে সঞ্জয় ঘোষের বাড়ি, কাশিনগরে দেবীশঙ্কর মিদ্যার বাড়ি। কোলকাতার সময় এই সব বাঙালি সংগ্রাহক দের সেলুট জানায়। বাঙালি জাতি একদিন এদের কাছে থেকে নিশ্চিত তাদের গর্বের ইতিহাস ঐতিহ্যের কথা জানতে পারবেন। এঁদের সংগ্রহ আমাদের সব সময় সমৃদ্ধ করবে।