প্রবাসী আমি পেটের দায়ে। প্রবাসী বলেই বোধহয় কলিকাতা মিস করি।গত দু’মাস ধরে কলকাতার দুই টো খবরে আমার মতো বহু মানুষের মন খারাপ খবরের মধ্যে একটা খুব ভালো খবর এই শহরের জন্য। । সাদা চুলো সাদা পোশাকের নিপাট ভদ্রলোক টা আমাদের ছেড়ে চলে যাওয়া। আর ট্রাম গাড়ি বন্ধ হয়ে যাওয়া। টালিগঞ্জ পাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে হয় আমাকে তাই খবরটা আমার কাছে অবাক করা ছিলো না। ট্রাম কোম্পানির জমিতে কি একটা কাজ চলছে। বিলাসবহুল বাড়ি উঠবে বোধহয়। আসলে আমরা মধ্যবিও মানুষ। ওসব খোঁজ খবর নিয়ে কি করবো বলুন। আবহাওয়া দপ্তর ঝড়ে খবর দিলে , আমরা ছাদ বাগানের টব সরাতে যখন ব্যাস্ত থাকি তখন লালু ভুলুরা নেতার ভাই ভাইপো হিসাবে করে ত্রাণের ত্রিপল বেঁচে, তিন তাল ছাদটায় মার্বেল বসানো যাবে কিনা।
যাইহোক দীর্ঘ সময় কোমায় থাকার পর আবার পুনরুজ্জীবন হলো কলকাতার ট্রামের। পাকাপাকি ভাবে ট্রাম বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবরে বহু কলকাতাবাসী ব্যথিত হয়েছিলেন।philosopher’s car-ফিলোজপার কার” বন্ধ হবার প্রতিবাদ ও আন্দোলনও চলছিল।
এরই মধ্যে গত ২২শে অক্টোবর কলকাতার দুটি রুটে আবার ট্রাম চলা শুরু হলো। সত্যি বলুন তো বিদেশে এখনো বহু শহরেই তো ট্রাম চলছে। কলকাতায় বন্ধ হবে কেন??
আজব শহর কলকাতা। এখানে ময়দানে রাজনৈতিক সভা চলতে পারে। কিন্তু দূষণের অজুহাতে বন্ধ হয় বই।তবে ২২শে অক্টোবর বেছে নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ। কেননা কবি জীবনানন্দ দাশ যিনি ট্রামকে বলেছিলেন- “philosopher’s car-ফিলোজপার কার” এবং এই ট্রামের ধাক্কায় যাঁকে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করতে হয়েছিল দিনটি ছিল তাঁর সত্তরতম মৃত্যুবার্ষিকী। কী আশ্চর্য সমাপতন। সেই ২২শে অক্টোবর—কবির মৃত্যুদিনে বন্ধ হয়ে থাকা ট্রাম আবার প্রাণ ফিরে চলতে শুরু করল।
যে দুটি রুটে ট্রাম আবার চালু হলো—
0১ ধর্মতলা থেকে শ্যামবাজার :: রুট নং ৫।
0২ গড়িয়াহাট থেকে ধর্মতলা:: রুট নং ২৫।
কতৃপক্ষ জানিয়েছেন খুব হয়তো শীঘ্রই টালিগঞ্জ হইতে বালিগঞ্জ রুটেও ট্রাম চালু করা হবে।