আজ কলকাতা যুবক হয়েছে। অনেক নতুন বন্ধু পেয়েছে। পিজা হাট, wow momo, KFC কত নতুন নতুন দেশি বিদেশি বন্ধু। কিন্তু আজ তোমাদের একটা দোকানের গল্প বলবো তার আয় থেকে চলে স্কুল।কয়েক দশক অজস্র ছাত্রছাত্রীর পড়াশোনা করে তাদের পয়সায়। ‘অনাদি কেবিন’—
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সময়ের কথা। তরুণ বলরাম জানা মেদিনীপুরের ধুইপাড়া গ্রামের ছেলে , কর্মের সন্ধানে কলকাতায় আসেন | একটা মুদির দোকান করেন। সেটা না চলায়, তিনি ধর্মতলায় এক সাহেবের রেস্তোরাঁয় রাঁধুনির কাজ নেন |সেই সাহেব দেশে ফেরার সময় বলরামকে সেই রেস্তোরাঁটি বিক্রি করে দেন | আর সেখানেই ১৯৪৫ সাল থেকে বলরাম জানা শুরু করেন নিজের ব্যবসা “অনাদি কেবিন” | অনাদি তাঁর ছেলে। যক্ষ্মায় প্রাণ হারানো ছেলে নামেই রেস্তোরাঁটির নাম রাখেন তিনি “অনাদি কেবিন | অনাদি কেবিনের মোগলাই খুব জনপ্রিয় বললে ভুল হবে, এর স্বাদে আজও মুগ্ধ বাঙালি |মোগলাই পরোটার নাম শুনলে প্রথমেই যে দোকানের কথা মনে পড়ে সেটি হল ধর্মতলার “অনাদি কেবিন” | কলকাতার কেবিন কালচার বহুদিনের পুরোনো ঐতিহ্য ।ব্রিটিশ আর পর্তুগিজ খাবার নিয়ে মূলত কেবিন শুরু , তবে অনেক কেবিন হারিয়ে গেলেও আজও রয়ে গেছে অনাদি কেবিন | দোকানের ভিতরে একদম ছোট জায়গা macdonald মতো চকচকে নাহলেও বড় আন্তরিকতার সাথে রয়েছে বেশ কিছু চেয়ার টেবিল, সেখানে বসেই চলে বাঙালির আড্ডা | ধুতির উপর গামছা বাঁধা রাঁধুনি’ ভেজেই চলেছেন একের পর এক মোগলাই পরোটা |
অনাদি কেবিনে কি কি পাওয়া যায় ?
মোগলাই পরোটা আর কষা মাংস ভীষণ জনপ্রিয় এই কেবিনের | তবে মুরগির ডিমের মোগলাই, হাঁসের ডিমের মোগলাই , আরো নানান মোগলাই ডিস ছাড়াও, ফিস কাটলেট, চিকেন কাটলেট |
তবে শুধু ব্যবসাই নয় করেই ক্ষান্ত হননি এরা।অনাদি কেবিন বাংলার উন্নতিসাধনেও বছরের পর বছর কাজ করে চলছে |বলরাম জানা অনাদি কেবিন চালু হওয়ার পরের বছরেই সাউটিয়া গ্রামে স্কুল খোলেন ।অনুপ্রেরণায় বন্ধু তথা বিশিষ্ট বিজ্ঞানী সূর্যেন্দুবিকাশ কর মহাপাত্র | এই দোকানের আয় থেকেই মেদিনীপুরের সাউটিয়া গ্রামের স্কুলটি চলে এখনও | এভাবেই বছরের পর বছর অজস্র ছাত্রছাত্রীর পড়াশোনার ভার বহন করে চলেছে ‘অনাদি কেবিন’ | এ জন্য শুধু বাঙালির ব্যবসা করে না, তৈরী করে সুস্থ সমাজ,এগিয়ে নিয়ে যায় সমাজকে।এগিয়ে চলুক অনাদি কেবিন , বাঙালি জাতির গর্ব আর প্রেরণা হিসেবে।
সত্যি বাঙালি হিসাবে আমরা গর্বিত